ঢাকা ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কিস্তি দিতে না পারায় গৃহবধূর আংটি ও বদনা নিয়ে গেলো এনজিও Logo হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ইসলাম ও মহানবী (সা.)–কে নিয়ে কটূক্তি, তরুণী আটক Logo সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতা ক্যাম্পেইন করেছে ট্যুরিজম বোর্ড Logo হবিগঞ্জে র‌্যাব-৯ এর পৃথক অভিযানে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলার দুই আসামি গ্রেফতার, দুই ভিকটিম উদ্ধার Logo ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ Logo মাধবপুরে সড়ক দু’র্ঘটনায় তরুণ কসমেটিক  ব্যবসায়ীর ম’র্মান্তিক মৃ’ত্যু Logo মাধবপুরে ৬ কেজি গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার Logo বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়াপুত্র রেজা কিবরিয়া। Logo গুলি খেতে না চাইলে এনসিপিতে আসুন: হাসনাত আবদুল্লাহ Logo বাহুবলে চোরাই সন্দেহে মহিষ ও পিকআপসহ দুইজন আটক

তুমি না মরলে আমি মাহীরের হতে পারব না, জোবায়েদকে বর্ষা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট সময় : ০১:২২:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ৮৬ বার পড়া হয়েছে
বিজয় নিউজ ২৪ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গন্নাথ বিশ্ববিদ্যাল ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনের হত্যার ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেছেন, জোবায়েদ তখনো মারা যায়নি। বাঁচার জন্য দোতলা থেকে উপরে ওঠে। তিন তলায় দাঁড়িয়ে ছিল বর্ষা। তখন বর্ষাকে দেখে জোবায়েদ বলে, আমাকে বাঁচাও। কিন্তু বর্ষা বলে, তুমি না মরলে আমি মাহীরের হতে পারব না। বর্ষা তার মৃত্যু কনফার্ম করে যায়। তখন জোবায়েদ বাঁচার জন্য দরজায় নক করেও কারও সাড়া পায়নি।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ডিসি মল্লিক আহসান।

তিনি বলেন, মেয়েটা অনেক চালু। দুদিকেই সম্পর্ক বজায় রাখে। এটি একটি ত্রিভুজ প্রেম। মিন্নির ঘটনার প্রায় কাছাকাছি।

এদিকে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, এটা বর্ষা ও মাহীরের পরিকল্পিত হত্যা। বর্ষার সঙ্গে মাহীরের ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মাঝে আবার বর্ষা জোবায়েদের ওপর দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় বর্ষা মাহীরকে না করে দেয় এবং সে জোবায়েদেকে পছন্দ করে বলে জানায়। কিন্তু কিছুদিন পরেই তার বয়ফ্রেন্ড মাহীরকে জানায় যে, জোবায়েদকে আর ভালো লাগে না। তখন জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে বর্ষা ও মাহীর।

 

ওসি বলেন, প্রাথমিকভাবে জোবায়েদকে হত্যার এই পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেনি বর্ষা। পরে মাহীর ও বর্ষাকে মুখোমুখি করলে সব সত্যতা জানা যায়। জোবায়েদকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই পরিকল্পনা করে তারা। এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার শেষ প্রস্তুতি চলছে।

 

জোবায়েদ হোসাইন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলার ১৫, নূরবক্স লেনের রওশান ভিলা নামের একটি বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন। ওই ছাত্রী বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।

গত রোববার বিকেল আনুমানিক ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তৃতীয় তলায় উঠতে গিয়ে সিঁড়িতেই খুন হন জোবায়েদ। বাসার নিচতলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল, আর তৃতীয় তলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় তার মরদেহ।

পরে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে রাখেন। ওইদিন রাত ১১টার দিকে পুলিশ ওই ছাত্রী বর্ষাকে হেফাজতে নেয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর আরমানিটোলার নূরবক্স লেনের নিজ বাসা থেকে পুলিশ প্রটোকলে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন জোবায়েদ হোসাইনের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

তুমি না মরলে আমি মাহীরের হতে পারব না, জোবায়েদকে বর্ষা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেট সময় : ০১:২২:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

গন্নাথ বিশ্ববিদ্যাল ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনের হত্যার ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেছেন, জোবায়েদ তখনো মারা যায়নি। বাঁচার জন্য দোতলা থেকে উপরে ওঠে। তিন তলায় দাঁড়িয়ে ছিল বর্ষা। তখন বর্ষাকে দেখে জোবায়েদ বলে, আমাকে বাঁচাও। কিন্তু বর্ষা বলে, তুমি না মরলে আমি মাহীরের হতে পারব না। বর্ষা তার মৃত্যু কনফার্ম করে যায়। তখন জোবায়েদ বাঁচার জন্য দরজায় নক করেও কারও সাড়া পায়নি।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ডিসি মল্লিক আহসান।

তিনি বলেন, মেয়েটা অনেক চালু। দুদিকেই সম্পর্ক বজায় রাখে। এটি একটি ত্রিভুজ প্রেম। মিন্নির ঘটনার প্রায় কাছাকাছি।

এদিকে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, এটা বর্ষা ও মাহীরের পরিকল্পিত হত্যা। বর্ষার সঙ্গে মাহীরের ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মাঝে আবার বর্ষা জোবায়েদের ওপর দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় বর্ষা মাহীরকে না করে দেয় এবং সে জোবায়েদেকে পছন্দ করে বলে জানায়। কিন্তু কিছুদিন পরেই তার বয়ফ্রেন্ড মাহীরকে জানায় যে, জোবায়েদকে আর ভালো লাগে না। তখন জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে বর্ষা ও মাহীর।

 

ওসি বলেন, প্রাথমিকভাবে জোবায়েদকে হত্যার এই পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেনি বর্ষা। পরে মাহীর ও বর্ষাকে মুখোমুখি করলে সব সত্যতা জানা যায়। জোবায়েদকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই পরিকল্পনা করে তারা। এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার শেষ প্রস্তুতি চলছে।

 

জোবায়েদ হোসাইন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলার ১৫, নূরবক্স লেনের রওশান ভিলা নামের একটি বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন। ওই ছাত্রী বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।

গত রোববার বিকেল আনুমানিক ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তৃতীয় তলায় উঠতে গিয়ে সিঁড়িতেই খুন হন জোবায়েদ। বাসার নিচতলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল, আর তৃতীয় তলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় তার মরদেহ।

পরে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে রাখেন। ওইদিন রাত ১১টার দিকে পুলিশ ওই ছাত্রী বর্ষাকে হেফাজতে নেয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর আরমানিটোলার নূরবক্স লেনের নিজ বাসা থেকে পুলিশ প্রটোকলে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন জোবায়েদ হোসাইনের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।