ঢাকা ০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী হ*ত্যার ঘটনায় অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৪ Logo হবিগঞ্জে ১৮৮০ বোতল বিদেশি মদ‘সহ  গ্রেফতার দুই  Logo খুলনায় যুবদল নেতাকে গুলি করে ও পায়ের রগ কেটে হত্যা Logo চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল Logo চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল Logo হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার Logo নবীগঞ্জে লাগাতার সংঘর্ষের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৬ সাংবাদিকসহ ৩২ জনের নামে মামলা! অজ্ঞাত ৫হাজার Logo মাধবপুরে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল: কিশোরীর আত্মহত্যা Logo পাইকপাড়ায় ফিল্মি স্টাইলে ছাত্রীকে অপহরণের ঘটনায় সহোদরসহ গ্রেফতার ৩ Logo জনি হত্যার আসামির ওপর আদালত প্রাঙ্গণে হামলা, ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের এজাহার দায়ের। সিসি ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তারের নির্দেশ 

আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পেটালো জনতা!

ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট সময় : ১২:৩৩:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫ ৮২ বার পড়া হয়েছে
বিজয় নিউজ ২৪ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বগুড়া পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সভাপতি আবদুল বাকীর বাড়িতে গুলি রেখে চাঁদা দাবির অভিযোগে রুহুল আমিন নামে এক পুলিশ সদস্যকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেছে বিক্ষুদ্ধ জনতা।

 

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর শাহ্পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। পুলিশ প্রহরায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ে অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন শাজাহানপুর থানায় ওই পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন ও স্থানীয়রা জানান, আগের করা একটি অপরাধে কনস্টেবল রুহুল আমিন পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত। তিনি প্রায় এক সপ্তাহ আগে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর শাহপাড়ার বাড়িতে এসে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল বাকীর খোঁজ নেন। তিনি বাড়িতে না থাকায় এ সময় খরচ হিসেবে ৫০০ টাকা নিয়ে চলে যান। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে আবারও তিনি ওই বাড়িতে আসেন। এ সময় বাড়িতে কোনও পুরুষ সদস্য ছিলেন না। বেলা দেড়টার দিকে বাকীর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সবুজ (৩২) বাড়িতে আসেন। এ সময় কনস্টেবল রুহুল আমিন বলেন, গত ৫ আগস্ট সদর থানা থেকে অনেক অস্ত্র লুট হয়েছে। এ বাড়িতে কিছু অস্ত্র আছে বলে তিনি সবুজকে পাশের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে টিনের মতো বাক্স খুলতে বলেন। সবুজ বাক্সটি খুললে ভেতরে শটগানের পাঁচ রাউন্ড গুলি বের হয়। এরপর কনস্টেবল রুহুল আমিন আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে সবুজকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে এসে বসেন। একটি ব্যাগ বের করে তার ভেতরে ১৫ রাউন্ড গুলি বের করে বলেন, এসব দিয়ে মামলা দেওয়া হবে।

কনস্টেবল রুহুল আমিনের কথায় সবুজ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। তিনি বোন অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুনকে ফোন দেন। রুহুল আমিন ওই ফোন দিয়ে শাপলা খাতুনের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তিনি (শাপলা) জানান, তার ভাই সবুজ ব্রেন টিউমারের রোগী। ওকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। আর না ছাড়লে থানায় নিয়ে যেতে বলেন। এ সময় কনস্টেবল রুহুল আমিন অ্যাডভোকেট শাপলাকে বলেন, ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য তো অপেক্ষা করছি না। এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দিলে ওকে (সবুজ) ছেড়ে দেওয়া হবে। এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বললে রুহুল আমিন বলেন, আমরা প্রায় ৮-৯ জন পুলিশ আছি। আমি ভেতরে একা ও অন্যরা সব বাইরে আছেন। এ সময় তিনি এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে সবুজকে ছাড়িয়ে নিতে বলেন।

এ অবস্থায় অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন ও স্বামী শাহাদত আলম কোর্ট থেকে অটোরিকশায় বাড়িতে আসেন। তিনি আসার পর আশপাশের লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। পুলিশ কনস্টেবল চাঁদাবাজি করতে এসেছেন বুঝতে পেরে জনগণ তাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারপিট করেন। এ সময় অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ ও যৌথবাহিনীর সদস্যরা এসে কনস্টেবল রুহুল আমিনকে নিয়ে যান। পরে তিনি (শাপলা) শাজাহানপুর থানায় ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ দেন।

এ ব্যাপারে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম পলাশ গণমাধ্যমকে জানান, আগের একটি অভিযোগে কনস্টেবল রুহুল আমিন পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত আছেন। মারপিটে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘কনস্টেবল রুহুল আমিন রাতে ডিউটি করে অস্ত্র জমা দিয়েছেন। হয়তো সরকারি গুলিগুলো জমা দেননি। আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ে অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পেটালো জনতা!

আপডেট সময় : ১২:৩৩:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

 

বগুড়া পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সভাপতি আবদুল বাকীর বাড়িতে গুলি রেখে চাঁদা দাবির অভিযোগে রুহুল আমিন নামে এক পুলিশ সদস্যকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেছে বিক্ষুদ্ধ জনতা।

 

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর শাহ্পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। পুলিশ প্রহরায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ে অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন শাজাহানপুর থানায় ওই পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন ও স্থানীয়রা জানান, আগের করা একটি অপরাধে কনস্টেবল রুহুল আমিন পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত। তিনি প্রায় এক সপ্তাহ আগে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর শাহপাড়ার বাড়িতে এসে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল বাকীর খোঁজ নেন। তিনি বাড়িতে না থাকায় এ সময় খরচ হিসেবে ৫০০ টাকা নিয়ে চলে যান। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে আবারও তিনি ওই বাড়িতে আসেন। এ সময় বাড়িতে কোনও পুরুষ সদস্য ছিলেন না। বেলা দেড়টার দিকে বাকীর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সবুজ (৩২) বাড়িতে আসেন। এ সময় কনস্টেবল রুহুল আমিন বলেন, গত ৫ আগস্ট সদর থানা থেকে অনেক অস্ত্র লুট হয়েছে। এ বাড়িতে কিছু অস্ত্র আছে বলে তিনি সবুজকে পাশের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে টিনের মতো বাক্স খুলতে বলেন। সবুজ বাক্সটি খুললে ভেতরে শটগানের পাঁচ রাউন্ড গুলি বের হয়। এরপর কনস্টেবল রুহুল আমিন আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে সবুজকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে এসে বসেন। একটি ব্যাগ বের করে তার ভেতরে ১৫ রাউন্ড গুলি বের করে বলেন, এসব দিয়ে মামলা দেওয়া হবে।

কনস্টেবল রুহুল আমিনের কথায় সবুজ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। তিনি বোন অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুনকে ফোন দেন। রুহুল আমিন ওই ফোন দিয়ে শাপলা খাতুনের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তিনি (শাপলা) জানান, তার ভাই সবুজ ব্রেন টিউমারের রোগী। ওকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। আর না ছাড়লে থানায় নিয়ে যেতে বলেন। এ সময় কনস্টেবল রুহুল আমিন অ্যাডভোকেট শাপলাকে বলেন, ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য তো অপেক্ষা করছি না। এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দিলে ওকে (সবুজ) ছেড়ে দেওয়া হবে। এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বললে রুহুল আমিন বলেন, আমরা প্রায় ৮-৯ জন পুলিশ আছি। আমি ভেতরে একা ও অন্যরা সব বাইরে আছেন। এ সময় তিনি এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে সবুজকে ছাড়িয়ে নিতে বলেন।

এ অবস্থায় অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন ও স্বামী শাহাদত আলম কোর্ট থেকে অটোরিকশায় বাড়িতে আসেন। তিনি আসার পর আশপাশের লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। পুলিশ কনস্টেবল চাঁদাবাজি করতে এসেছেন বুঝতে পেরে জনগণ তাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারপিট করেন। এ সময় অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ ও যৌথবাহিনীর সদস্যরা এসে কনস্টেবল রুহুল আমিনকে নিয়ে যান। পরে তিনি (শাপলা) শাজাহানপুর থানায় ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ দেন।

এ ব্যাপারে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম পলাশ গণমাধ্যমকে জানান, আগের একটি অভিযোগে কনস্টেবল রুহুল আমিন পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত আছেন। মারপিটে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘কনস্টেবল রুহুল আমিন রাতে ডিউটি করে অস্ত্র জমা দিয়েছেন। হয়তো সরকারি গুলিগুলো জমা দেননি। আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ে অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’