ঢাকা ০৫:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo মাধবপুরে থান কাপড়ে মোড়ানো ৫৭ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারি গ্রেফতার Logo নদীকে তার মূল গতিপথে ফিরিয়ে না দিলে ভাঙ্গন রোধ সম্ভব নয় : ধরা Logo জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের পরীক্ষা দিতে গিয়ে গ্রেফতার জেলা প্রশাসনের কর্মচারী! Logo শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল! Logo যে অভিশাপে ৮০ বছরের বেশি টেকে না ইহুদী রাষ্ট্র! Logo বাহুবলে বিএনপির অফিস ভাংচুর ৩৭ জনের নামে মামলা Logo ‘মরো অথবা পালাও’, ইসরাইলিদের যে কোনো একটি বেছে নিতে বললো ইরান Logo বাড়ির উঠানে গাঁজার গাছ! মালিক গ্রেফতার Logo বাহুবলে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে ৯২ কেজি গাঁজাসহ কারবারি আটক Logo শায়েস্তাগঞ্জে রঙ মিশ্রিত মাছ বিক্রি, দুই ব্যবসায়ীর ২১ কেজি মাছ জনসম্মুখে বিনষ্ট

বিএনপি অফিসে টেবিলে পা তুলে আ’লীগ কর্মীর ধূমপান, ভাইরাল

ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৮:৪১:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫ ২০৩ বার পড়া হয়েছে
বিজয় নিউজ ২৪ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বিএনপি অফিসে চেয়ারে বসে টেবিলে পা তুলে সিগারেট খাচ্ছেন হারুন আর রশিদ নামে আওয়ামী লীগের এক কর্মী। সামনে বসেছিলেন বেশ কয়েকজন। গতকাল রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ছবি ভাইরাল হয়।

‘জিয়ার সৈনিক’ নামে ফেসবুক আইডি থেকে হারুন অর রশিদের টেবিলে পা তোলা ও হাতে জ্বলন্ত সিগারেটের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে ‘বাহ্! আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ভূমিদস্যু একাব্বর চেয়ারম্যানের ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী হারুন বলে কথা। বিএনপির অফিসে হাতে সিগারেট আর টেবিলে পা তুলে বসে থাকা সাধারণ জনগণকে মোটেও অবাক করেনি। কারণ এই এলাকায় স্বজনপ্রীতি রাজনৈতিক হালচাল। কিন্তু প্রশ্ন হলো আওয়ামী লীগের সময় এই স্বজনগুলো কোথায় ছিল?

জানা গেছে, ওই অফিসে উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা বসেন। তবে এটি ২নং ওয়ার্ড বিএনপির অফিস। অফিসটি উপজেলার গারোবাজরে অবস্থিত। আর হারুন ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী। তার বাড়ি সিংহচালা গ্রামে। তার বাবা একাব্বর আলী ছিলেন বৃহত্তর রসুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে লক্ষিন্দর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর হারুন পালিয়ে ভারতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঢাকা থেকে ফেরত আসেন। পালাতে পারেননি। পরবর্তীতে বিএনপির নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় প্রকাশ্যে আসেন হারুন। বিএনপির নেতাদের সঙ্গে গড়ে তোলেন সখ্যতা। এর ফলেই তিনি পৌঁছে যান বিএনপির অফিস পর্যন্ত। ওই অফিসে দিন-রাত আড্ডা দেন তিনি।’

স্থানীয়রা জানান, তিনমাস আগে বিএনপির এই অফিস উদ্বোধন করা হয়। ১৫ দিন না যেতেই হারুন ওই অফিসে যাতায়াত শুরু করেন। সঙ্গে নিয়ে যান আওয়ামী লীগের আরও অনেক নেতাকর্মী। রাত-দিন অফিসে আড্ডা দেন।

উপজেলা বিএনপির সদস্য ও লক্ষিন্দর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আক্কাস আলী আকন্দ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতার দোষ কম। আমাদের নেতৃত্বে যারা আছেন, তারা এই অফিস পরিচালনা করেন। অর্থ্যাৎ সিনিয়ররা আওয়ামী লীগদের সঙ্গে নিয়ে অফিসে বসেন। বিএনপির সিনিয়ররা আওয়ামী লীগ ছাড়া চলতে পারেন না। জুলাই বিপ্লবের পর দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলেন হারুন। কিন্তু আমাদের কিছু লোক অভয় দিয়ে এলাকায় রাখার ব্যবস্থা করেছে। মনে হয় অফিসটা আমাদের না, আওয়ামী লীগের অফিস।’

মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয় হারুন আর রশিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এটা আসলে বিএনপির অফিস না। এটা এখোলা ঘর। কারণে-অকারণে ওই ঘরে যাওয়া হয়। ওই ঘরটি উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ইকবাল তালুকদারের ভাই খোরশেদ তালুকদারের। সম্পর্কে ইকবাল তালুকদার আমার মামা। ছবিটি যে রাতে তোলা হয়েছে সেই রাতে ওই ঘরে আড্ডায় আমার সঙ্গে ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম।’

লক্ষিন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। গারোবাজারের ওই অফিসটা ইউনিয়ন বিএনপির না, ওইটা ২নং ওয়ার্ড বিএনপির অফিস। ওইখানে বসেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ইকবাল তালুকদার।’

ইকবাল তালুকদার বলেন, ‘লক্ষিন্দর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা এ অফিসে বসেন। হারুন আমার বোনের দেবরের ছেলে। সম্পর্কে ভাগনে। কখন সে এই অফিসে এসে এ কাজ করেছে আমি জানি না।’

এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে যদি কেউ আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বিএনপি অফিসে টেবিলে পা তুলে আ’লীগ কর্মীর ধূমপান, ভাইরাল

আপডেট সময় : ০৮:৪১:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বিএনপি অফিসে চেয়ারে বসে টেবিলে পা তুলে সিগারেট খাচ্ছেন হারুন আর রশিদ নামে আওয়ামী লীগের এক কর্মী। সামনে বসেছিলেন বেশ কয়েকজন। গতকাল রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ছবি ভাইরাল হয়।

‘জিয়ার সৈনিক’ নামে ফেসবুক আইডি থেকে হারুন অর রশিদের টেবিলে পা তোলা ও হাতে জ্বলন্ত সিগারেটের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে ‘বাহ্! আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ভূমিদস্যু একাব্বর চেয়ারম্যানের ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী হারুন বলে কথা। বিএনপির অফিসে হাতে সিগারেট আর টেবিলে পা তুলে বসে থাকা সাধারণ জনগণকে মোটেও অবাক করেনি। কারণ এই এলাকায় স্বজনপ্রীতি রাজনৈতিক হালচাল। কিন্তু প্রশ্ন হলো আওয়ামী লীগের সময় এই স্বজনগুলো কোথায় ছিল?

জানা গেছে, ওই অফিসে উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা বসেন। তবে এটি ২নং ওয়ার্ড বিএনপির অফিস। অফিসটি উপজেলার গারোবাজরে অবস্থিত। আর হারুন ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী। তার বাড়ি সিংহচালা গ্রামে। তার বাবা একাব্বর আলী ছিলেন বৃহত্তর রসুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে লক্ষিন্দর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর হারুন পালিয়ে ভারতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঢাকা থেকে ফেরত আসেন। পালাতে পারেননি। পরবর্তীতে বিএনপির নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় প্রকাশ্যে আসেন হারুন। বিএনপির নেতাদের সঙ্গে গড়ে তোলেন সখ্যতা। এর ফলেই তিনি পৌঁছে যান বিএনপির অফিস পর্যন্ত। ওই অফিসে দিন-রাত আড্ডা দেন তিনি।’

স্থানীয়রা জানান, তিনমাস আগে বিএনপির এই অফিস উদ্বোধন করা হয়। ১৫ দিন না যেতেই হারুন ওই অফিসে যাতায়াত শুরু করেন। সঙ্গে নিয়ে যান আওয়ামী লীগের আরও অনেক নেতাকর্মী। রাত-দিন অফিসে আড্ডা দেন।

উপজেলা বিএনপির সদস্য ও লক্ষিন্দর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আক্কাস আলী আকন্দ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতার দোষ কম। আমাদের নেতৃত্বে যারা আছেন, তারা এই অফিস পরিচালনা করেন। অর্থ্যাৎ সিনিয়ররা আওয়ামী লীগদের সঙ্গে নিয়ে অফিসে বসেন। বিএনপির সিনিয়ররা আওয়ামী লীগ ছাড়া চলতে পারেন না। জুলাই বিপ্লবের পর দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলেন হারুন। কিন্তু আমাদের কিছু লোক অভয় দিয়ে এলাকায় রাখার ব্যবস্থা করেছে। মনে হয় অফিসটা আমাদের না, আওয়ামী লীগের অফিস।’

মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয় হারুন আর রশিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এটা আসলে বিএনপির অফিস না। এটা এখোলা ঘর। কারণে-অকারণে ওই ঘরে যাওয়া হয়। ওই ঘরটি উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ইকবাল তালুকদারের ভাই খোরশেদ তালুকদারের। সম্পর্কে ইকবাল তালুকদার আমার মামা। ছবিটি যে রাতে তোলা হয়েছে সেই রাতে ওই ঘরে আড্ডায় আমার সঙ্গে ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম।’

লক্ষিন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। গারোবাজারের ওই অফিসটা ইউনিয়ন বিএনপির না, ওইটা ২নং ওয়ার্ড বিএনপির অফিস। ওইখানে বসেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ইকবাল তালুকদার।’

ইকবাল তালুকদার বলেন, ‘লক্ষিন্দর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা এ অফিসে বসেন। হারুন আমার বোনের দেবরের ছেলে। সম্পর্কে ভাগনে। কখন সে এই অফিসে এসে এ কাজ করেছে আমি জানি না।’

এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে যদি কেউ আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’