ঢাকা ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নিখোঁজের চার দিনেও খোঁজ মিলেনি মাদ্রাসা ছাত্র রিফাত হাসানের Logo লাখাইয়ে ঈদগাহ মাঠে বসাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ আহত ১৬ Logo হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার-সিলেট এক্সপ্রেস বাস চলাচল বন্ধ Logo এবার ঈদে পশু কুরবানি কমেছে পৌনে ১৩ লাখ Logo বাহুবলে আলী আহমদ হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাট Logo বাহুবলে দু’পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত ১ Logo মাধবপুরে রাবার ড্যাম থেকে নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ উদ্ধার Logo বানিয়াচংয়ে ঈদের ২য় দিন টেটা যুদ্ধে নিহত ১, আহত অর্ধশত Logo জলাবদ্ধতা নিরসনে পুরাতন খোয়াই নদী, পুকুর ও জলাশয় নিয়ে শীর্ষক আলোচনা সভা Logo শেখ মুজিব ও জাতীয় চার নেতাসহ মুজিবনগর সরকারের সকলেই মুক্তিযোদ্ধা: ফারুক ই আজম

জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প; আবারো ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৩৭ বার পড়া হয়েছে
বিজয় নিউজ ২৪ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজারো মানুষ। মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক কিছু নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ৫০টি অঙ্গরাজ্যে হাজার হাজার মানুষ একযোগে রাস্তায় নেমে আসেন। আন্দোলনটির নাম ছিল “৫০৫০১” অর্থাৎ ৫০টি অঙ্গরাজ্যে ৫০টি প্রতিবাদ, একটাই আন্দোলন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক এবং শিকাগোসহ প্রধান শহরগুলো বিক্ষোভ হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসীদের বিতাড়ন, সরকারি চাকরি থেকে ছাঁটাই, গাজা ও ইউক্রেন নীতির বিরোধীরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, হোয়াইট হাউসের সামনে বিভিন্ন স্লোগান-সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিয়েছেন। প্ল্যাকার্ডে ‘ওয়ার্কার শুড হ্যাভ দ্য পাওয়া বা শ্রমিকদের অবশ্য শক্তি থাকা উচিত’, ‘নো কিনশিপ বা রাজতন্ত্রকে না বলুন’, ‘স্টপ আর্মিং ইসরায়েল বা ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করুন’, রেসিস্ট টাইরেনি বা অত্যাচার ঠেকিয়ে দাও’ এবং ‘ইমিগ্রেন্টস আর ওয়েলকাম হেয়ার বা অভিবাসীদের স্বাগত’সহ নানা সেøাগান দিতে দেখা গেছে। অন্যান্য শহরেও একই ধরনের প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে।

বিক্ষোভকারীরা এই আন্দোলনকে “স্বাধীনতার জন্য নতুন লড়াই”বলে দাবী করছেন। 

এদিকে রোববার (২০ এপ্রিল) বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জনমত জরিপে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে। গ্যালাপের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশে, যেখানে গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার শুরুতে এই হার ছিল ৪৭ শতাংশ। একই সময়ে ১৯৫২ থেকে ২০২০ পর্যন্ত যেকোনও প্রেসিডেন্টের গড় প্রথম কোয়ার্টার জনপ্রিয়তা ছিল ৬০ শতাংশ। 

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে জনগণের সন্তুষ্টি আরও কমেছে। রয়টার্স/ইপসোসের জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৩৭ শতাংশ আমেরিকান ট্রাম্পের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা পছন্দ করছেন, যেখানে জানুয়ারিতে এই হার ছিল ৪২ শতাংশ।

এদিনের বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল অভিবাসন ও সরকারি ব্যয়ের কাটছাঁটের ইস্যুটি। হোয়াইট হাউসের সামনেসহ উত্তর আমেরিকার এই দেশটির বহু শহরের কেন্দ্রস্থলে, এমনকি কিছু টেসলা শোরুমের সামনেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। নানা দাবির ভিড়ে সবচেয়ে বেশি উঠে আসে কিলমার আবরেগো গার্সিয়া নামে এক ব্যক্তির ফেরত আনার দাবি।

মূলত গার্সিয়া একজন মার্কিন অভিবাসী যাকে ভুলবশত এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তার সমর্থনে এদিনের বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন গিহাদ এলজেন্দি নামে এক বিক্ষোভকারী। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে তিনি বলেন, “ট্রাম্প চাইলে এল সালভাদরের ওপর চাপ দিয়ে গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনতে পারতেন।”

প্রতিবাদকারীরা “ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই)” নামক ট্রাম্প প্রশাসনের এক প্রকল্পের বিরুদ্ধেও কথা বলেন। সরকারি ব্যয় এবং চাকরি কমানোর উদ্দেশ্যে এই সংস্থাটি তৈরি করা হয়েছে। এ ধরনের পদক্ষেপকে অনেকেই গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন।

এদিকে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শান্তিপূর্ণ হলেও কিছু জায়গায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এক ঘটনায় ডেমোক্র্যট কংগ্রেসম্যান সুহাস স্রুবামানিয়াম এক ট্রাম্প-সমর্থকের সাথে তর্কে জড়ান, যার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

 

অবশ্য শনিবারের এই বিক্ষোভকে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ বলে মনে করা হচ্ছে না। কারণ চলতি এপ্রিলের শুরুতে “হ্যান্ডস অফ” শিরোনামে আরও বড় একটি প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ১২০০টি স্থানে, ৫০টি অঙ্গরাজ্যের সবগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ট্রাম্প ফের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সেটিকেই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প; আবারো ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০৬:৪৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজারো মানুষ। মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক কিছু নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ৫০টি অঙ্গরাজ্যে হাজার হাজার মানুষ একযোগে রাস্তায় নেমে আসেন। আন্দোলনটির নাম ছিল “৫০৫০১” অর্থাৎ ৫০টি অঙ্গরাজ্যে ৫০টি প্রতিবাদ, একটাই আন্দোলন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক এবং শিকাগোসহ প্রধান শহরগুলো বিক্ষোভ হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসীদের বিতাড়ন, সরকারি চাকরি থেকে ছাঁটাই, গাজা ও ইউক্রেন নীতির বিরোধীরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, হোয়াইট হাউসের সামনে বিভিন্ন স্লোগান-সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিয়েছেন। প্ল্যাকার্ডে ‘ওয়ার্কার শুড হ্যাভ দ্য পাওয়া বা শ্রমিকদের অবশ্য শক্তি থাকা উচিত’, ‘নো কিনশিপ বা রাজতন্ত্রকে না বলুন’, ‘স্টপ আর্মিং ইসরায়েল বা ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করুন’, রেসিস্ট টাইরেনি বা অত্যাচার ঠেকিয়ে দাও’ এবং ‘ইমিগ্রেন্টস আর ওয়েলকাম হেয়ার বা অভিবাসীদের স্বাগত’সহ নানা সেøাগান দিতে দেখা গেছে। অন্যান্য শহরেও একই ধরনের প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে।

বিক্ষোভকারীরা এই আন্দোলনকে “স্বাধীনতার জন্য নতুন লড়াই”বলে দাবী করছেন। 

এদিকে রোববার (২০ এপ্রিল) বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জনমত জরিপে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে। গ্যালাপের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশে, যেখানে গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার শুরুতে এই হার ছিল ৪৭ শতাংশ। একই সময়ে ১৯৫২ থেকে ২০২০ পর্যন্ত যেকোনও প্রেসিডেন্টের গড় প্রথম কোয়ার্টার জনপ্রিয়তা ছিল ৬০ শতাংশ। 

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে জনগণের সন্তুষ্টি আরও কমেছে। রয়টার্স/ইপসোসের জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৩৭ শতাংশ আমেরিকান ট্রাম্পের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা পছন্দ করছেন, যেখানে জানুয়ারিতে এই হার ছিল ৪২ শতাংশ।

এদিনের বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল অভিবাসন ও সরকারি ব্যয়ের কাটছাঁটের ইস্যুটি। হোয়াইট হাউসের সামনেসহ উত্তর আমেরিকার এই দেশটির বহু শহরের কেন্দ্রস্থলে, এমনকি কিছু টেসলা শোরুমের সামনেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। নানা দাবির ভিড়ে সবচেয়ে বেশি উঠে আসে কিলমার আবরেগো গার্সিয়া নামে এক ব্যক্তির ফেরত আনার দাবি।

মূলত গার্সিয়া একজন মার্কিন অভিবাসী যাকে ভুলবশত এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তার সমর্থনে এদিনের বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন গিহাদ এলজেন্দি নামে এক বিক্ষোভকারী। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে তিনি বলেন, “ট্রাম্প চাইলে এল সালভাদরের ওপর চাপ দিয়ে গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনতে পারতেন।”

প্রতিবাদকারীরা “ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই)” নামক ট্রাম্প প্রশাসনের এক প্রকল্পের বিরুদ্ধেও কথা বলেন। সরকারি ব্যয় এবং চাকরি কমানোর উদ্দেশ্যে এই সংস্থাটি তৈরি করা হয়েছে। এ ধরনের পদক্ষেপকে অনেকেই গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন।

এদিকে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শান্তিপূর্ণ হলেও কিছু জায়গায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এক ঘটনায় ডেমোক্র্যট কংগ্রেসম্যান সুহাস স্রুবামানিয়াম এক ট্রাম্প-সমর্থকের সাথে তর্কে জড়ান, যার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

 

অবশ্য শনিবারের এই বিক্ষোভকে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ বলে মনে করা হচ্ছে না। কারণ চলতি এপ্রিলের শুরুতে “হ্যান্ডস অফ” শিরোনামে আরও বড় একটি প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ১২০০টি স্থানে, ৫০টি অঙ্গরাজ্যের সবগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ট্রাম্প ফের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সেটিকেই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।