চুনারুঘাটে চা-বাগান ও বন-ছড়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হুমকিতে পরিবেশ! নীরব বন বিভাগ-প্রশাসন

- আপডেট সময় : ০৭:০২:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫ ১০২ বার পড়া হয়েছে
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছেই। ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে প্রকাশ্যে তোলা হচ্ছে বালু। এতে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চা-বাগান, পাহাড়ি ছড়া, সংরক্ষিত বন ও ফসলি জমি, তেমনি ক্ষতি হচ্ছে রাস্তাঘাটেরও হুমকিতে পরেছে স্বাভাবিক পরিবেশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসন মাঝেমধ্যে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান চালালেও কার্যকর স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেই।
চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের পানছড়ি, পঞ্চাশ, ডেউয়াতলী এবং সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের দেওছড়া ও ইছালিয়া ছড়া এলাকা থেকে তোলা হয় বালু। পানছড়ি এলাকার রঘুনন্দন পাহাড়ের পাদদেশ থেকে উত্তোলনের ফলে সংরক্ষিত বনটিও পড়েছে ঝুঁকিতে। পরিবেশ অধিদপ্তর এবং উপজেলা প্রশাসন মামলা করলেও অপরাধীরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও চালিয়ে যাচ্ছে বালুর ব্যবসা। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় রাজনীতিবিদেরা ছাড়াও এসব চক্রের সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা জড়িত। চক্রগুলো অবৈধভাবে পাচার করছে মূল্যবান সিলিকা বালুও।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শানখলা ইউনিয়নের পানছড়ি এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে জড়িত স্থানীয় আসমত উল্লার ছেলে আমজত উল্লাহ। একই এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে জড়িত রয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরিদ মিয়ার ছেলে ফয়েজ মিয়া, মাহফুজ মিয়া, বাবলু মিয়াসহ কয়েকজন। এ ইউনিয়নের পঞ্চাশ এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় নানু মিয়ার ছেলে আসাদ। মহিমাউড়া এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন একই এলাকার বজলু মিয়া ও শামীম মিয়া। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে রাজনৈতিক দল যখন ক্ষমতায় থাকে, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বালু উত্তোলন করেন এই ব্যক্তিরা। এই বালু শাহপুর সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে পাচার করা হয় মাধবপুরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে। সূত্র জানায়, লালচান চা-বাগান এবং রঘুনন্দন রেঞ্জের কিছু অসাধু বন কর্মকর্তাকে মাসোহারা দিয়ে এই বালু বন ও বাগানের ভেতর দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে।
রঘুনন্দন রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মোজাম্মেল হোসেন ভূঞা বলেন, ‘যে স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, সেটি আমাদের সংরক্ষিত বন থেকে ২০০ মিটারের বাইরে। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে উত্তোলন করছে তারা। তবে বনের ভেতর দিয়ে বালু পাচারকালে একাধিক গাড়ি আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছে। আবারও অভিযান চলবে।’
সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের ইছালিয়া ছড়া থেকে বালু উত্তোলন করছে আব্দুল হামিদের ছেলে জিতু মিয়া। এই ইউনিয়নের দেওছড়া থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ আছে সাটিয়াজুরী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মশরফ আলী কাওসারের বিরুদ্ধে। তবে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা এলাকায় বৈধভাবে বালু উত্তোলনের কাজ পরিচালনা করি, সরকারি নিয়মকানুন মেনেই সবকিছু চলছে। এলাকায় কিছু ব্যক্তি রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আমাদের সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টা করছে।’
যদিও সাটিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও বিএনপি নেতা শামীম খান বলেন, ‘আমাদের এলাকায়, বিশেষ করে দারাগাঁও গ্রাম ও চা-বাগান এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বিগত ১২ বছর হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিমের প্রভাবে এই অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছিল। এখন দারাগাঁও গ্রাম এবং আশপাশের চা-বাগান মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা এর প্রতিবাদে সমাবেশ করেছেন। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।’
এ নিয়ে কথা হয় পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন সোহেলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘চুনারুঘাটের পাহাড়ি ছড়া ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে যেভাবে বালু উত্তোলন ও পাচার হচ্ছে, তা পরিবেশের জন্য ভয়ংকর হুমকি। একটি সুস্থ বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য প্রশাসনের আরও সক্রিয় হওয়া দরকার। শুধু মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে বা মামলা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করা যাবে না।
এম এ রাজা, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছেই। ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে প্রকাশ্যে তোলা হচ্ছে বালু। এতে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চা-বাগান, পাহাড়ি ছড়া, সংরক্ষিত বন ও ফসলি জমি, তেমনি ক্ষতি হচ্ছে রাস্তাঘাটেরও হুমকিতে পরেছে স্বাভাবিক পরিবেশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসন মাঝেমধ্যে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান চালালেও কার্যকর স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেই।
চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের পানছড়ি, পঞ্চাশ, ডেউয়াতলী এবং সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের দেওছড়া ও ইছালিয়া ছড়া এলাকা থেকে তোলা হয় বালু। পানছড়ি এলাকার রঘুনন্দন পাহাড়ের পাদদেশ থেকে উত্তোলনের ফলে সংরক্ষিত বনটিও পড়েছে ঝুঁকিতে। পরিবেশ অধিদপ্তর এবং উপজেলা প্রশাসন মামলা করলেও অপরাধীরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও চালিয়ে যাচ্ছে বালুর ব্যবসা। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় রাজনীতিবিদেরা ছাড়াও এসব চক্রের সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা জড়িত। চক্রগুলো অবৈধভাবে পাচার করছে মূল্যবান সিলিকা বালুও।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শানখলা ইউনিয়নের পানছড়ি এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে জড়িত স্থানীয় আসমত উল্লার ছেলে আমজত উল্লাহ। একই এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে জড়িত রয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরিদ মিয়ার ছেলে ফয়েজ মিয়া, মাহফুজ মিয়া, বাবলু মিয়াসহ কয়েকজন। এ ইউনিয়নের পঞ্চাশ এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় নানু মিয়ার ছেলে আসাদ। মহিমাউড়া এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন একই এলাকার বজলু মিয়া ও শামীম মিয়া। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে রাজনৈতিক দল যখন ক্ষমতায় থাকে, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বালু উত্তোলন করেন এই ব্যক্তিরা। এই বালু শাহপুর সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে পাচার করা হয় মাধবপুরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে। সূত্র জানায়, লালচান চা-বাগান এবং রঘুনন্দন রেঞ্জের কিছু অসাধু বন কর্মকর্তাকে মাসোহারা দিয়ে এই বালু বন ও বাগানের ভেতর দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে।
রঘুনন্দন রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মোজাম্মেল হোসেন ভূঞা বলেন, ‘যে স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, সেটি আমাদের সংরক্ষিত বন থেকে ২০০ মিটারের বাইরে। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে উত্তোলন করছে তারা। তবে বনের ভেতর দিয়ে বালু পাচারকালে একাধিক গাড়ি আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছে। আবারও অভিযান চলবে।’
সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের ইছালিয়া ছড়া থেকে বালু উত্তোলন করছে আব্দুল হামিদের ছেলে জিতু মিয়া। এই ইউনিয়নের দেওছড়া থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ আছে সাটিয়াজুরী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মশরফ আলী কাওসারের বিরুদ্ধে। তবে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা এলাকায় বৈধভাবে বালু উত্তোলনের কাজ পরিচালনা করি, সরকারি নিয়মকানুন মেনেই সবকিছু চলছে। এলাকায় কিছু ব্যক্তি রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আমাদের সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টা করছে।’
যদিও সাটিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও বিএনপি নেতা শামীম খান বলেন, ‘আমাদের এলাকায়, বিশেষ করে দারাগাঁও গ্রাম ও চা-বাগান এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বিগত ১২ বছর হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিমের প্রভাবে এই অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছিল। এখন দারাগাঁও গ্রাম এবং আশপাশের চা-বাগান মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা এর প্রতিবাদে সমাবেশ করেছেন। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।’
এ নিয়ে কথা হয় পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন সোহেলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘চুনারুঘাটের পাহাড়ি ছড়া ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে যেভাবে বালু উত্তোলন ও পাচার হচ্ছে, তা পরিবেশের জন্য ভয়ংকর হুমকি। একটি সুস্থ বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য প্রশাসনের আরও সক্রিয় হওয়া দরকার। শুধু মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে বা মামলা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করা যাবে না।