হবিগঞ্জে গত ২০১৬ সালে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ নামের প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম শুরু করে। গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর নতুন করে হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ নাম দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘ ৮ বছরেও হয়নি স্থায়ী ক্যাম্পাস। নেই ছাত্রদের পর্যাপ্ত ক্লাসরুম। হাতে-কলমে চিকিৎসা সেবা শেখার জন্য নেই অপারেশন থিয়েটার। শ্রেণিকক্ষ ও গবেষণাগার ক্লিনিক্যাল সংকট।
চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, হাতে-কলমে শিক্ষার ঘাটতি নিয়ে শুধু বই পড়েই চিকিৎসক হয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
নিজস্ব ক্যাম্পাস ও কিছু ক্ষেত্রে আবাসন-সুবিধা না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যেও হতাশা তৈরি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মানসম্মত চিকিৎসা পাওয়া নিয়ে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
অন্যদিকে হঠাৎ করে যদি মেডিকেল কলেজটি সরিয়ে নেওয়া হয় তাহলে অধ্যায়নরত প্রায় ৫ শত শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পরবে।
দেশে মোট মেডিকেল কলেজ ১১০টি। এর মধ্যে সরকারি মেডিকেল কলেজ আছে ৩৭টি। যার মধ্যে নিজস্ব ভবন ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ছাড়া চলছে হবিগঞ্জ সরকারি মেডিকেল কলেজ।
নাম না প্রকাশের শর্তে , মেডিকেল কলেজে সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি জানান, সাবেক এমপি আবু জাহিরের জন্যই দীর্ঘ আট বছরেও হয়নি স্থায়ী ক্যাম্পাস। তিনি স্থায়ী ক্যাম্পাসের জমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে প্রস্তাব করেছেন। কোন জায়গায়ই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি। মূলত তার নিজের স্বার্থ হাসিল না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি অধিগ্রহন।
মূলত সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার কোনো নীতিমালা বা শর্ত নেই। সরকারে থাকা ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের ইচ্ছায় এসব মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিতে না পারলে অর্ধশিক্ষিত চিকিৎসক তৈরি হবে। এতে আর যা-ই হোক, মানুষ মানসম্মত চিকিৎসা পাবে না।
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ১ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করা হবিগঞ্জ মেডিকেলে কলেজে আইটি ব্যাচে মোট শিক্ষার্থী ৫০৫ জন। ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কয়েকটি কক্ষ নিয়ে হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চলে। এ ছাড়া বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকসংকট চরমে। শিক্ষকদের ৮৩টি পদের মধ্যে শূন্য ৩৬টি।
মেডিকেল কলেজের দাপ্তরিক কাজ চলে দ্বিতীয় তলায়। সেখানে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি পৃথক কক্ষ। বাকি সব শিক্ষকের জন্য একটি কক্ষ। দ্বিতীয় তলায় আংশিক ও তৃতীয় তলায় প্রায় তিন হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ পাঠদান করা হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে ৫১ জনের ধারণক্ষমতার শ্রেণিকক্ষ থাকলেও এখন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ১০০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে। শিক্ষার্থী বাড়লেও শ্রেণিকক্ষের আয়তন বাড়েনি।